কক্সবাজার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯। আজ কক্সবাজার শহরে অনুষ্ঠিত এক মানব বন্ধন থেকে কুতুদিয়া দ্বীপকে বাঁচাতে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে সম্পৃক্ত করে কংক্রিটের ব্লকের মাধ্যমে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার দাবি জানান অধিকারভিত্তিক স্থানীয় নাগরিক সমাজ। মানব বন্ধনটি যৌথভাবে আয়োজন করে কোস্ট ট্রাস্ট,কুতুবদিয়া উন্নয়ন পরিষদ, পালস কক্সবাজার, হেলপ কক্সবাজার, সিএইচইআরডিএফ, মেঘনা ফাউন্ডেশন, অধিকার কক্সবাজার, কক্সবাজার জলবায়ু ফোরাম ও জনসংগঠন।
মানব বন্ধনে কোস্ট ট্রাস্টের সহকারী পরিচালক মকবুল আহামদ বলেন, কুতুবদিয়ায় প্রতিবছর সমুদ্রের পানিতে শত শত গ্রাম ও ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সম্প্রতি বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ ঠিকাদারের অদক্ষতা ও সমন্বয়হীনতার অভাবে বন্ধ হয়ে আছে। কক্সবাজার মেরিনড্রাইভের মতো সেনাবাহিনীর প্রকৌশল টিমের তত্ত্বাবধানে কুতুবদিয়ায় কংক্রিট ব্লকের মাধ্যমে দীর্ঘস্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা প্রয়োজন।
পরিবেশ সংগঠনের সভাপতি মো: ইলিয়াছ বলেন, কুতুবদয়িায় ৪০ কিঃমিঃ বেড়িবাঁধের স্থলে মাত্র ৮ কিঃমিঃ বেড়িবাঁধ নির্মিত হয়েছে। কুতুবদিয়ার মানুষ দিন দিন বাস্তুচ্যুত হচ্ছে। এই অবস্থা চলমান থাকলে আগামী পাঁচ বছরে এই দ্বীপ বিলীন হয়ে যাবে বলে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আইনজীবী আবু মুছা মোহাম্মদ বলেন, অযত্ন অবহেলা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে কুতুবদিয়ার অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বাঁধের কাজ শক্তিশারী করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কাজে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন রহমান পেয়ারু বলেন, কুতুবদিয়াকে যদি রক্ষা করা না যায় তাহলে আরও কুতুবদিয়া পাড়া সৃষ্টি হবে। যদি বাঁশখালীতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা যায় তাহলে কুতুবদিয়াতে কেন নয়?
জাসদ কক্সবাজার জেলার যুগ্ম সম্পাদক মোঃ হোসাইন মাসু বলেন, কুতুবদিয়াকে কেন্দ্র করে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হচ্ছে কিন্তু বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না । দুর্নীতির মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের কারণে বেড়িবাঁধের কাজ বারবার বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সতর্ক নজর দিতে হবে। কালারমারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যন রহুল কাদের বাবুল বলেন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সদিচ্ছা থাকলে খুব অল্প সময়ে সম্ভব টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা। কুতুবদিয়া বাঁধ নির্মাণে সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানো জরুরি। কক্সবাজার জলবায়ু ফোরামের সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলার মানুষ জলবায়ু উদ্বাস্তু যা দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৬০ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প যদি সেনাবাহিনীর মাধ্যমে করা হতো তাহলে তার সুফল কুতুবদিয়াবাসী এতদিনে ভোগ করতে পারতো। পুরো অনুষ্টানটি সঞ্চালনা করেন মিজানুর রহমান বাহাদুর।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের মাধমে মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ও মাননীয় উপমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে এই বিষয়ে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা, সেগুলো হলো: ১.মেরিন ড্রাইভের মতো সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে বাঁধ নির্মানে সম্পৃক্ত করতে হবে। ২. উপজেলা পরিষদে, জেলা পরিষদে এবং জেলা প্রশাসকের মাসিক সমন্বয় সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তার কাজের অগ্রগতি রিপোর্ট পেশ করতে হবে। ৩. পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিটি কাজের প্রকাশ্য স্থানে কাজের পরিমান, গুণগত মান, টাকা বরাদ্দ ও ঠিকাদারের নামসহ সাইনবোর্ড দিতে হবে ৪.উপজেলা সদরে প্রতি ১৫ দিন অন্তর সংবাদ সম্মেলন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজের অগ্রগতি প্রদান করতে হবে ৫. যে কোন ধরণের সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়া বন্ধ করতে হবে এবং সাব-কন্ট্রাক্ট দেয়ার নিয়ম বাতিল করতে হবে ৬. পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকল কাজ ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে বাস্তবায়ন করতে হবে ৭.শুষ্ক মৌসুমে বেড়িবাঁধের কাজ শেষ চাই, বেড়িবাঁধের চারিপাশে স্থায়ী প্যারাবন চাই।
Photos
![]() |
Newspaper:














![CSOs urge at Belem [CoP-30] climate conference: Struggle will be continuing until trillion-dollar needs are met](https://coastbd.net/wp-content/uploads/2025/11/Media-Photo_1-218x150.jpg)