উপকূলীয় অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে কোস্টের জরুরী ত্রাণ সহায়তা

0

গত সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ দেখা দেয় এবং এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। ফলস্বরূপ, জোয়ারের ঢেউয়ের ফলে কক্সবাজার, ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং নোয়াখালী জেলার অনেক বাঁধ ভেঙে শত শত গ্রাম প্লাবিত হয়। ভোলা এবং কক্সবাজার জেলায় এই দুর্যোগে মোট চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যার পাশাপাশি জোয়ারের তীব্রতায় অসংখ্য ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

চলমান দুর্যোগের সাড়াদানে, কোস্ট ফাউন্ডেশন ভোলা এবং কক্সবাজার জেলার ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠিকে সহায়তা প্রদান শুরু করে। কোস্ট প্রাথমিকভাবে নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে, বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন চর (দ্বীপ) অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলিকে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা প্রদানের জন্য। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের সাথে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সেখানকার মানুষ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতিতে ভুগছে।

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), এস কে আহসান উদ্দিনের নির্দেশ ও সমন্বয়ে, কোস্ট সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের ১০০টি পরিবারের জন্য খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করেছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আজও ত্রাণ নিয়ে সেন্ট মার্টিন যাওয়া যায়নি।

তবে আজ ২ জুন ২০২৫ তারিখে মনপুরা উপজেলার চর কলাতলী ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্থ ২০০ পরিবারের মাঝে ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ১ কেজি মুসরী ডাল, ১ কেজি লবন, ১ লিটার সয়াবিন তেল এর ১টি করে প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কোস্ট ফাউন্ডেশনের ভোলা জেলার সহকারী পরিচালক রাশিদা বেগম , কৈশোর প্রকল্প সমন্বয়কারী খোঁকন চন্দ্র শীল ও সিসিআর প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার রাজিব ঘোষসহ কোস্ট ফাউন্ডেশনের অন্যান্য কর্মীবৃন্দ। উল্লেখ্য যে, আগামীকাল তজুমদ্দিন উপজেলার চাদপুর ইউনিয়নে আরো ১০০টি ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সহায়তা করা হবে।

পাশাপাশি চরফ্যাশন উপজেলাধীন হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে বজ্রপাতে গত ২৯ মে ২০২৫ তারিখে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। ঐ দিন দুপুর বেলা নুরে আলম (৪৫) পিতা আমির হোসেন মৃধা গৃহপালিত গরু মাঠ থেকে আনার জন্য গেলে আকষ্মিক বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। উক্ত বজ্রপাতে নুরে আলম মারা যায় এবং তার ২ ছেলে বজ্রপাতে আহত হয়ে নিকটস্থ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বর্তমান বাড়িতে আছেন। কোস্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ হতে নুর আলমের স্ত্রী সুলতানা বেগমকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। তার ২ ছেলে ২ মেয়ে এবং ১ মেয়ে বিয়ে দিয়েছে এবং অপর সন্তানেরা স্কুলে পড়া-লেখা করেন। সুলতানা বলেন এ টাকায় তার সন্তানের লেখা-পড়ার খরচে সহায়ক হবে। তার নিজের বসত ভিটা নেই। সে জানায় এখন পর্যন্ত কোস্ট ফাউন্ডেশন ব্যতিত অন্য কোথাও থেকে কোন ধরণের সহায়তা পায়নি। সে সরকারিভাবে ১টি বিধবা ভাতার আবেদন জানায়।

দুর্যোগ মোকাবেলায়, কোস্টের নির্বাহী পরিচালক এম রেজাউল করিম চৌধুরী ৩১ মে ২০২৫ তারিখে জরুরি সভা আয়োজন করেছেন। তিনি বলেন, দুর্যোগের সময় ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়কে সহায়তা করা আমাদের দায়িত্ব কারণ আমরা তাদের কাছে দায়বদ্ধ। তিনি আরও বলেন যে, কোস্ট ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়কে সহায়তা করার জন্য দাতাদের কাছ থেকে আরও তহবিল সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

Please Download Press Release [Bangla] [English]