”নারীর ক্ষমতায়ন, মানবতার উন্নয়ন” এই মুল প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যথাযোগ্য মর্যাদায় ভোলা জেলায় ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৫ পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, ভোলা, এর আয়োজনে, কোস্ট ট্রাস্ট ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় র্যালী ও আলোচনা সভার আায়োজন করা হয়।
জেলা প্রশাসক জনাব মো: সেলিম রেজার নেতৃত্বে সকাল ৯.৩০ মি: জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে শহরের গুরুত্বপুর্ন রাস্তা প্রদক্ষিন করে জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। র্যালিতে তৃনমুলের বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সরকারী, বেসরকারী দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ,সাংবাদিক সহ অনেকেই অংশনেন। র্যালি শেষে জেলা প্রশাসন মিলনায়তনে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জনাবা জেবুন্নেছার সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় উপস্থিত বক্তারা নারী দিবস এর গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ন বিষয়গুলো তুলে ধরেন। বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কোস্ট ট্রাস্টের প্রকল্প সমন্বয়কারী মো: হাসান বলেন অনেক ক্ষেত্রে নারীরা এখনো ক্ষমতাহীন, বৈষম্য ও নির্যাতনের শিকার। পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টি ভঙ্গির কারনে নারীদের ক্ষমতা সক্ষমতাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি মজুরী বৈষম্য বিদ্যমান। কর্ম ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত তাদের হয়রানি ও নির্যাতনের স্বীকার হতে হয় এগুলো সমাজ বিকাশের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়।শুধু আইন করেই নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় এজন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা। সকল স্তরে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে,কোস্ট ট্রাস্ট ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে ভোলা জেলার, জেলা, উপজেলা ও তৃনমুল পর্যায়ে, জাতীয় প্রচারাভিজান : মর্যাদাই গড়িই সমতা” শীঘ্রই শুরু করতে যাচ্ছে এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাষক(সার্বিক), জনাব সুব্রত কুমার সিকদার তার বক্তব্যে বলেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে নারীর প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতনের হার অনেকাংশেই হ্রাস পেয়েছে যা একদিনেই সম্ভব হয়নি। নারীর প্রতি বৈষম্য দুরীকরনে সবচেয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপুর্ন তা হলো মানবিক দৃষ্টি ভংগির পরিবর্তন।নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য,অবজ্ঞা,উপেক্ষা আর নির্যাতনের মানসিকতা নির্মূল করেই সম্ভব একটি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা আর এজন্য সবার আগে বদলাতে হবে আমাদের মানসিকতা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মহোদয় বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে প্রনীত হয়েছে সুনির্দ্দিষ্ট আইন ও নীতিমালা। আজ বাংলাদেশে এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে নারীর উপস্থিতি চোখে পড়ে না এবং যেখানে নারী কোন অবদান রাখেনি। তিনি আরো বলেন পারিবারিক পর্যায়ে নারীর অবদানকে সঠিকভাবে মূল্যায়ণ করতে হবে এবং যথাযোগ্য মর্যাদা দিতে হবে। অর্থনীতিতে নারীর অবদান সঠিকভাবে চিহ্নিতকরণ এবং একইভাবে গৃহস্থালী বিভিন্ন কাজের মূল্যায়নের উপরও তিনি জোর দেন। বিশেষ করে নারীদের উপর নির্ভরশীল শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের সেবাযতœ ও সমন্বিত জ্ঞানকে মূল্যায়ন ও ক্ষেত্র সমূহকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন এবং সমাজ থেকে নারী নির্যাতন,বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং নামক সামাজিক ব্যাধিগুলো দুর করতে সরকার ইতিমধ্যে বিভিন্ন আইন প্রনোয়ন করেছে যা জেলা প্রশাসন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বশেষে তিনি বলেন নারী ও পুরুষের সমন্বয়ের মাধ্যমেই একটি সুখী ও সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।এই প্রত্যাশাকে সামনে রেখে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন এবং দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের সাথে জড়িত সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জনাবা জেবুন্নেছা বলেন, দেশের সুষম ও স্থায়ী উন্নয়নের জন্য সরকার জেন্ডার মুল ধারা করনকে কৌশল হিসেবে গ্রহন করেছে। জেন্ডার সমতার বিষয়টি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এর গন্ডি পেরিয়ে এখন সকল সরকারি বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন এখনও গ্রামের প্রান্তিক নারীরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এবং তাদের পুরুষের অধঃস্তন পর্যায়ে রাখা হয়েছে।বিশেষত তৃনমুলে বসবাসরত দরিদ্র নারীরাই এই ধরনের বৈষম্যের শিকার হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন নারী পুরুষ উভয়ের সম অধিকার বাস্তবায়নের মাধ্যমেই একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

![CSOs urge at Belem [CoP-30] climate conference: Struggle will be continuing until trillion-dollar needs are met](https://coastbd.net/wp-content/uploads/2025/11/Media-Photo_1-218x150.jpg)
