Rezaul Karim Chowdhury of COAST Trust Quoted in BBC Radio ” বিশ্বে কার্বন নির্গমন যেভাবে চলছে তা কমানো না গেলে এখন থেকে আর ৮০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের এক বড় অংশ সাগরের পানির নিচে চলে যেতে পারে ” dated on 21 May 2019

0

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একটি জার্নাল প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে আর ৮০ বছরের মধ্যেই সমূদ্রপৃষ্টের উচ্চতা ৬০-২৩৮ সেন্টিগ্রেড বেড়ে যাবে। এর ফলে বাংলাদেশসহ আরো বেশ কিছু দেশ এবং নিউইয়র্ক, সাংহাই, লন্ডনসহ বিশ্বে বড় বড় শহরের বিরাট অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংরাদেশের ক্ষতি মোকাবেলায় বেশ কয়েক দশক ধরেই সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কাজ চলছে। কিন্তু নতুন এই গবেষনা প্রতিবেদনের জন্য কি ভাবছে বাংলাদেশ শুনুন ঢাকা থেকে পাঠানো ফারজানা পারভীনের প্রতিবেদনে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রীনল্যান্ড এবং এন্টাকটিকার বরফ গলার কারণে বিশ্বে সমূদ্রের উচ্চতা যে হারে বাড়ছে সেটা পূর্বের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশের মত যেসব এলাকায় ফসল ফলে সেসব এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যাবে এর ফলে। এছাড়া বড় শহরগুলোর মধ্যে নিউইয়র্ক, লন্ডন এবং সাংহাই ক্ষতিগ্রস্থ হবে। ২১০০ সালের মধ্যে বৈশ্যিক উষ্ণায়নের ফলে সমূদ্রের উচ্চতা যদি ৬২-২৩৮ সেন্টিমিটার বেড়ে যায় তাহলে বাংলাদেশের উপর কি প্রভাব পড়বে? উপকূলীয় এলাকায় কাজ করা সংস্থা কোস্টাল এ্যাসোসিয়েশন ফর সোস্যাল ট্রান্সফরমেসন ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলছিলেন, এর ফলে ২১০০ সাল নাগাদ ১৯টি উপকূলীয় জেলা তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২১০০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ১৯টি উপকূলীয় জেলা তলিয়ে যাবে। তো এটার ইফেক্টটা যা তা অলরেডি উপকূলীয় এলাকায় দেখা যাচ্ছে। যেমন আমরা দক্ষিণ-পশ্চিম সুন্দরবন এলাকার কথা বলি তাহলে আমরা অলরেডি দেখতে পাচ্ছি যে সেখানে পানির লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেছে। তারপর সাতক্ষীরা অঞ্চলে জোয়ারের প্লাবন বেড়ে গেছে। তারপর দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে যদি দেখি, কুতুবদিয়ার মত দ্বীপ সেই দ্বীপ অর্ধেক হয়ে গেছে।

বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে এভাবে যদি কার্বন নির্গমন হতে থাকে ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের তাপমাত্রা আরো ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট বেড়ে যাবে। যেটা বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে ভয়াবহ অবস্থা। তারা বলছেন এর ফলে বিশ্বের একটা বিরাট অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাবে যেটা লিবিয়া যে দেশ রয়েছে তার আয়োতনের সমান। বাংলাদেশের সরকার এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কি করছে? সরকারের পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলছিলেন, সমূদ্রের উচ্চতা রোধ করার জন্য তাদের কিছু করার নেই। তবে প্রতিরক্ষার জন্য জলবায়ু প্রতিরক্ষা ট্রাস্ট থেকে বাংলাদেশের নিজস্ব তহবিল থেকে কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের যে কোনো উপকূলীয় অঞ্চলে বিশেষ করে দুর্যোগের আগে আগে যেগুলো দেখাতে থাকে যে এরকম এরকম বাঁধগুলো রয়েছে, দুর্যোগে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। আর লবণাক্ততা পরিহার করার জন্য খালগুলোকে কেটে সেই মিষ্টি পানি পাতে বয়ে যেতে পারে সেদিক চেষ্টা করে থাকি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেদের উদ্যোগে এটা চালিয়ে যাচ্ছে, বাইরের কোনো কিছু আছে বলে আমার জানা নেই। বছরে সাড়ে ৩০০ কোটি তিনি দেন। বাইরের কোনো দেশে আছে বলে আমার জানা নেই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংস্থা ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সের করা একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটির অফিসিয়াল জার্নাল প্রসেডিং অব ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেস। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হবে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাফিজা খাতুন বলছিলেন, অনেক ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে নানা ধরণের গবেষণা হয়েছে। কিন্তু গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে তিনি মনে করেন।
লাভ কি আবার অসুবিধা কি সেটা জানা দরকার তাই না? সামনে কি আছে। সেই জানার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্ল্যানিংটা করতে হবে। এবং সেটা ইমপ্লিমেন্ট করতে হবে। কিভাবে, কে করবে, কেমন করে হবে, কার জন্য হবে এই জিনিসগুলো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি বলতে চাচ্ছি স্টাডি হয়েছে, হচ্ছে এবং টাকাও দেয়া হচ্ছে। সেই রেজাল্টটাকে নিয়ে ইনটিজেন্ট করে প্ল্যান করা চাই।
রিপোর্টার ভয়েসঃ এর আগে ২০১৩ সালে ইন্টার গর্ভামেন্ট প্যানেল ান ক্লাইমেট চেঞ্জ বা আইবিসিসি নামে পরিচিত সাখানে গবেষকরা ধারণা করছিলো সমূদ্রের উচ্চতা ৫২-৫৮ সেন্টিমিটার বেড়ে যাবে। যদিও ধারণা সে ধারণা নিয়ে বিতর্ক ছিলো। বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন এর মাত্রাটি অনেক রক্ষণশীল অর্থাৎ কম দেখানো হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এখনো সময় আছে এ খারাপ পরিস্থিতি থেকে বাঁচার জন্য। তবে সে জন্য উল্লেযোগ্য কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে।
ফারজানা করির, ঢাকা থেকে।

[Audio Click here] [BBC News Link]